'' বাংলা সাহিত্যের আসর ''

যে সমস্ত লেখক ও লেখিকা ' বাংলা সাহিত্যের আসরে ' তাদের নির্বাচিত লেখা প্রকাশ করতে চান,তারা তাদের লিখিত বিষয় টি Microsoft Words - এ লিখে অথবা Photo Shop -এ চিত্রসহ বিষয়টি প্রস্তুত করে samarkumarsarkar@yahoo.co.in বা samarkumarsarkar@gmail.com -এ E-mail করে পাঠিয়ে দেবেন । সদস্য হবার জন্য ও মন্তব্য লেখার জন্য Google Friend Connect ব্যবহার করুন। ব্লগ টিকে আপনাদের Face Book-এ Share করুন।

Saturday, July 20, 2013

পথে এসো - সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি




পথে এসো
*********
হনুমান ডেকে বলে,-"শোন বাঁদরেরা,
কোন দিনই এক নয়,'আমরা' ও 'তোরা'।
যদি ও দেখতে তোরা আমাদের-ই মত,
তবু ভাল,জেনে রাখ,তফাত টা কত !
যদি ও থাকিস গাছে,খাস ফল মূল,
গুণে,মানে তবু তোরা নয় সমতুল।
আমাদের পোড়া মুখ,রঙ ঘন কালো,
লাল মুখো বাঁদরের চেয়ে ঢের ভালো।
আমাদের লেজ বড়,জানে তা সবাই,
হয় না তোদের সাথে কোনো তুলনাই।
যার লেজ যত বড়,তত সে কুলীন,
আমাদের জাতি তোরা নয় কোনো দিন।"

বাঁদরেরা হেসে বলে,-"দাদা হনুমান,
বাঁদরামি আমাদের সবার-ই সমান।
হনুমান,বাঁদরের একই চুলকানি,
রেগে গেলে একই ভাবে মুখ ভেঙচানি।
একই ভাবে দল গড়ে সমাজ চালাই,
পরের খাবার কেড়ে মহা সুখে খাই।
লেজের মাপেতে তবে কেন করো ভেদ,
দুঃখে পরাণ জ্বলে,মনে বাড়ে খেদ।
লাল মুখ,কালো মুখ,চেহারা আলাদা,
একই প্রজাতির তবু,ভোলো কেন দাদা ?
লেজ বড় বলে দাদা কেন গো বড়াই?
পথে এসো,মিলেমিশে ভাগ করে খাই।"
********************************
সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি
********************************
Creative Commons License
পথে এসো by সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License.Based on a work at samarkumarsarkar.blogspot.in

[<a rel="license" href="http://creativecommons.org/licenses/by-nc-nd/3.0/deed.en_US"><img alt="Creative Commons License" style="border-width:0" src="http://i.creativecommons.org/l/by-nc-nd/3.0/88x31.png" /></a><br /><span xmlns:dct="http://purl.org/dc/terms/" property="dct:title">পথে এসো </span> by <a xmlns:cc="http://creativecommons.org/ns#" href="http://www.blogger.com/blogger.g?blogID=1050337976214013732#editor/target=post;postID=4915676153894957726;onPublishedMenu=template;onClosedMenu=template;postNum=0;src=link" property="cc:attributionName" rel="cc:attributionURL">সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি</a> is licensed under a <a rel="license" href="http://creativecommons.org/licenses/by-nc-nd/3.0/deed.en_US">Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License</a>.<br />Based on a work at <a xmlns:dct="http://purl.org/dc/terms/" href="samarkumarsarkar.blogspot.in" rel="dct:source">samarkumarsarkar.blogspot.in</a>.]


Thursday, July 18, 2013

ভূত যত অদ্ভুত - সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি


ভূত যত অদ্ভুত
**************

 ভূত-পেত্নী  আছে কি নেই; সবার-ই জিজ্ঞাসা,
মনের কোণের অন্ধকারে ভূত-পেত্নীর বাসা।  
বিদেহী সব আত্মা,যারা ভাসেন বায়ু স্তরে,
দেখলে ভীতু,হন যে থিতু,তাদের ই অন্তরে।
গা ছমছম অন্ধকারে আত্মা অশরীরী,
কল্পনাতে দেখে সবাই ভূত বলে ভয় করি।
ভূত-পেত্নীর চরিত-কথা যতটুকূ জানা,
একে একে দিলাম তাদের হুবহু বর্ণনা।

ব্রাহ্মণেরা অকালেতে মরলে অপঘাতে,
কিংবা যদি আত্মঘাতী হন যে কোনো মতে,
'ব্রহ্মদত্যি' হয়ে করেন বেল গাছেতে বাস,
 খড়ম পায়ে খটমটিয়ে হাঁটেন বার মাস।
সাদা কাপড় পরে থাকেন,ফল খেয়ে দিন কাটে,
আঁধার রাতে ঘুরে বেড়ান নিঝুম পথে-ঘাটে।
গাছের ডালে ঠ্যাং  ঝুলিয়ে বসে থাকেন সোজা,
ভূতের দেশের প্রধান তিনি,ভূত-পেত্নীর রাজা।

স্বামীর ভালবাসায় খুশী নয় যে সকল নারী,
পর পুরুষে মজে করে নানা কেলেঙ্কারি।
অপঘাতে মৃত্যু হলেই 'শাঁখচুন্নী' হয়,
শাঁখা,সিঁদুর,ঘোমটা পরে,শেওড়া গাছে রয়।
নজর রাখে আশেপাশের পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে,
কোন্ নারীকে যুবক স্বামী বড়ই সোহাগ করে।  
সুযোগ পেলেই নাক দিয়ে তার দেহে ঢুকে যায়,
পর পুরুষের সোহাগেতে সুখে দিন কাটায়।

 যে  নারী রা ভালবাসে গয়না ভরি ভরি,
প্রসাধনী হরেক রকম,টাকা,দামী শাড়ি
অপঘাতে মৃত্যু হ'লেই 'চোরাচুন্নী' হয়,
গৃহস্থদের খাটের নীচে লুকিয়ে তারা রয়।
ফাঁকা ঘরে এ দিক ও দিক করে ঘোরাফেরা,
গয়না,শাড়ি,সাজের জিনিস করে নাড়াচাড়া।
অসাবধানে রাখলে জিনিস,তারাই চুরি করে,
গৃহস্থ রা পায় না তা আর,বৃথাই খুঁজে মরে।

গাছে চাপা পড়ে যাদের অকালে প্রাণ যায়,
গেছো ভূত আর পেত্নী হয়ে গাছেই দিন কাটায়।
দিনের বেলায় বাদুড় সেজে ঝোলে গাছের ডালে,
সন্ধ্যা শেষে নামলে আঁধার,চোখ দপ্ দপ্ জ্বলে।
আঁধার রাতে একলা পথিক পেলে পথের ধারে,
 অতর্কিতে গলা টিপে,আছড়ে তাকে মারে।
 ঝড়-বাদলের দিনেতে কেউ গাছের তলায় এলে,
গাছের ডালে চাপা দিয়ে অমনি মেরে ফেলে।

মাছ না হ'লে ভাত খাবে না,এমন যাদের জেদ,
জলে ডুবে মৃত্যু হ'লে যায় না মনের খেদ,
মাছের আঁশের গন্ধে তাদের মন উতলা হয়,
মেছো ভূত আর পেত্নী হয়ে বেড়ায় জলাশয়।
হাঁটু জলে দাঁড়িয়ে জেলে যখন ফেলে জাল,
হাত ঢুকিয়ে মাছ তুলে খায় যেই দেখে ফাঁকতাল।
আঁধার রাতে রান্না ঘরে মাছ যদি কেউ রাঁধে,
জানলা দিয়ে হাত বাড়িয়ে "মাঁছ দেঁ" বলে কাঁদে।

প্রসব কালে যে রমণী মরে অপঘাতে-
'পেঁচো' নামক পেত্নী হয়ে বেড়ায় বাড়ির ছাতে।
খবর রাখে কোন বাড়ি তে হবে ছেলেপুলে,
সেই বাড়িরই ছাতে রাতে নাচে হেলে দুলে।
নবজাতক দেখলে কেবল সুযোগ খুঁজে ফেরে,
শিশু ফেলে মা ঘুমোলেই,পেঁচোর নজর পড়ে।
শিশুর দেহে ঢুকে পেঁচো,রক্ত চুষে খায়,
শিরদাঁড়া টি বেঁকে শিশুর অকালে প্রাণ যায়।

ব্যর্থ প্রেমে দগ্ধ হয়ে,কিংবা ঋণের দায়ে,
আত্মঘাতী হলে পরে গলায় দড়ি দিয়ে-
'গলায় দড়ে' হয়ে ঘোরে ঝুলিয়ে গলায় দড়ি,
নজর রাখে,কোন মানুষের মন বড় কমজোরি।
ফিসফিসিয়ে কানে কানে বলে তাকে,"শোনো,
এই দুনিয়ায় বেঁচে থাকার মানে তো নেই কোনো
ফাঁসির দড়ি টাঙ্গিয়ে বাছা শীঘ্র পড়ো ঝুলে,
আশায় আশায় বসে আছি,এসো আমার দলে।"

রেল লাইনে গলা দিয়ে মুণ্ডু কাটা গেলে,
অপঘাতী আত্মাটিকে 'স্কন্দকাটাবলে
মুণ্ডুবিহীন শরীর নিয়ে রেল লাইনের পাশে-
নজর রাখে,কে লাইনে গলা দিতে আসে।
সাথে সাথে 'স্কন্দকাটা' কানে কানে বলে,-
"মুণ্ডু থাকার বড়ই জ্বালা,মুণ্ডু টি দাও ফেলে।
মুণ্ডু যদি না থাকে তো চিন্তা কিসের ভাই?
ভাবার চেয়ে কঠিন কিছু এই জগতে নাই।"

গ্রামাঞ্চলের গরীব ঘরে,মিশিয়ে ভাতে জল,
সকাল বিকাল লঙ্কা ডলে পান্তা খাবার চল।
তাদের ঘরের ছেলে মেয়ে মরলে অনাহারে,
'পান্তা ভূতের ছানা' হয়ে কাটায় রান্না ঘরে।
এমনি তারা শান্ত অতি,ব্যবহার ও ভাল,
মাঝে মাঝে পান্তা ভাতের যোগান পেলেই হ'লো।
সুযোগ পেলেই পান্তা ভাতের পাত্রে দিয়ে মুখ,
আমানি খায় চুমুক দিয়ে,এতেই তাদের সুখ।

ফেসবুকেতে কাটায় যারা সমস্ত দিন রাত,
সময় মত স্নান করে না,খায় না মোটেই ভাত,
খেলাধূলা,আড্ডা ভুলে ফেসবুকেতে মাতে,
সারা টা দিন 'লাইক' মারে,মাউস নিয়ে হাতে।
এমন আধা পাগল যদি অপঘাতে মরে,
'লাইকানো' ভূত হয়ে কেবল পাড়ায় পাড়ায় ঘোরে।
গভীর রাতে একলা যদি কেউ খোলে 'ফেসবুক',
'লাইক মারা' দাঁড়িয়ে দেখে,এতেই ওদের সুখ।

  যে সব নারী সুন্দরী,আর চাল চলনে ন্যাকা,
কথা বলে ঠোঁট বেঁকিয়ে,দৃষ্টি হানে বাঁকা,
কয়লা যেমন হয় না সাদা,সাবান জলে ধুলে,
স্বভাব তেমন যায় না ওদের প্রাণ গেলে অকালে।
'নেঁকী পেত্নী' হয়ে থাকে সুন্দরীদের মনে,
ন্যাকামিতে পুরুষ জাতির মাথা টা নেয় কিনে।
অন্য ভূতের হাতে পড়ে হয় না তেমন ক্ষতি, 
নেঁকী-র হাতে পড়লে পুরুষ,জীবনে দুর্গতি।।

************************************
সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি
************************************
Creative Commons License
ভূত যত অদ্ভুত by সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License.Based on a work at samarkumarsarkar.blogspot.in

[<a rel="license" href="http://creativecommons.org/licenses/by-nc-nd/3.0/deed.en_US"><img alt="Creative Commons License" style="border-width:0" src="http://i.creativecommons.org/l/by-nc-nd/3.0/88x31.png" /></a><br /><span xmlns:dct="http://purl.org/dc/terms/" property="dct:title">ভূত যত অদ্ভুত</span> by <a xmlns:cc="http://creativecommons.org/ns#" href="http://www.blogger.com/blogger.g?blogID=1050337976214013732#editor/target=post;postID=5162475629736256839;onPublishedMenu=allposts;onClosedMenu=allposts;postNum=1;src=link" property="cc:attributionName" rel="cc:attributionURL">সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি</a> is licensed under a <a rel="license" href="http://creativecommons.org/licenses/by-nc-nd/3.0/deed.en_US">Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License</a>.<br />Based on a work at <a xmlns:dct="http://purl.org/dc/terms/" href="samarkumarsarkar.blogspot.in" rel="dct:source">samarkumarsarkar.blogspot.in</a>.]

Monday, July 15, 2013

ভূতের গ্রাম-পঞ্চায়েত ভোট - সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি

ভূতের গ্রাম-পঞ্চায়েত ভোট
**********************

গভীর রাতে বিশাল বটের তলায় জমায়েত,
ভূতেরা সব ঠিক করেছে,গড়বে পঞ্চায়েত।
এতদিন তো ব্রহ্মদৈত্য করতো মাতব্বরি,
স্বজন পোষণ,ধনীর তোষণ,নানান কেলেঙ্কারি।

ভূতের সমাজ ঠিক করে তাই,মানুষেরই মত,
গড়বে নতুন গ্রামসভা;ভূত করে মনোনীত।
নানা গ্রামের প্রধান পদে একটি ক'রে আসন,
বেছে নিতে ভূত-প্রেতেরা লড়বে নির্বাচন।

আষাঢ় মাসের অমাবস্যার রাতে হবে ভোট,
নির্বাচিত গ্রাম প্রধানের হবে নতুন জোট।
জোটের নেতা হবেন যিনি,তিনিই হবেন রাজা,

তার কথা যে শুনবে না,সে পাবে কঠোর সাজা।
ভূত-পেত্নীর থাকবে না ভেদ,সমান অধিকার,
প্রার্থী হয়ে ভোটে দলের করবে সে প্রচার।
কলার পাতায় নানা দলের প্রতীক হবে ছাপা,
প্রতি ভূতের একখানি ভোট,হিসাব করে মাপা।


বামপন্থী ব্রহ্মদৈত্য,প্রতীক 'মাথার খুলি',
হেঁড়ে গলায় করলো প্রচার,এ গলি,সে গলি।
ডানপন্থী শাঁখচুন্নী,প্রতীক 'বুনো ফুল',

এমন ভীষণ করলো প্রচার,জাগলো হুলুস্থূল।
সমাজবাদী স্কন্ধকাটা-র প্রতীক 'গাছের ডাল',
ভোট প্রচারে গিয়ে কেবল করলো গালাগাল।
উপজাতির একনড়ে ভূত,প্রতীক 'পায়ের হাড়',
ভয় দেখালো,ভোট না দিলে,দেবে বেদম মার।

গেছো ভূত আর মেছো ভূত,আর গো-ভূতেরা মিলে,
দলের প্রতীক না পেয়ে শেষ দাঁড়ালো নির্দলে।

ঝোপে-ঝাড়ে,মাঠ-ভাগাড়ে,চললো প্রচার টানা,
ফিসফিসিয়ে লোভ দেখালো,ভরসা দিল নানা।
সবার মুখে একই কথা,"লড়িয়ে দিয়ে জান,
করবো সকল ভূতের সেবা,যে যতটা চান।
ভূত দাদারা,ভূত ভায়েরা,পেত্নী মা আর বোন,

ভোট টি দিয়ে জয়ী করুন,রাখছি আবেদন।"

অবশেষে আষাঢ় মাসের নির্ধারিত রাতে,

হাজার হাজার ভূত-পেত্নী দাঁড়িয়ে লাইনেতে,
একে একে প্রতীকেতে রক্তে দিয়ে ছাপ,
রাত দুপুরে করলো যে শেষ ভোটের প্রথম ধাপ।
শেষ রাতেত,গণনাতে এটাই গেল দেখা,
শাঁখচুন্নী সবার বেশী ভোট পেয়েছে একা।
জোটের নেত্রী হয়ে তিনি,হলেন ভূতের রাণী,
তার শাসনে ভূতেরা সব সুখী হবেন জানি।

বলতে পারো,এ সব খবর আমি পেলাম কোথায়?
খোলসা করে সত্যি কথা বলছি তবে তোমায়।
বর্ষা রাতের ঠাণ্ডা হাওয়ায় ঘুমিয়ে ছিলাম একা,
সেই সুযোগে স্বপ্নে আমায় দিলেন তারা দেখা।

তাদের রাজ্যে ঘটছে যা তার ধারা বিবরণী,
টাটকা,তাজা দেখিয়ে দিলেন,কি ভেবে কি জানি !
লেখক ছাড়া তাদের কথা বলার কে আর আছে,
ভূতেরা তো সব শিখেছে,মানুষেরই কাছে।

**************************************

সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি
**************************************