'' বাংলা সাহিত্যের আসর ''

যে সমস্ত লেখক ও লেখিকা ' বাংলা সাহিত্যের আসরে ' তাদের নির্বাচিত লেখা প্রকাশ করতে চান,তারা তাদের লিখিত বিষয় টি Microsoft Words - এ লিখে অথবা Photo Shop -এ চিত্রসহ বিষয়টি প্রস্তুত করে samarkumarsarkar@yahoo.co.in বা samarkumarsarkar@gmail.com -এ E-mail করে পাঠিয়ে দেবেন । সদস্য হবার জন্য ও মন্তব্য লেখার জন্য Google Friend Connect ব্যবহার করুন। ব্লগ টিকে আপনাদের Face Book-এ Share করুন।

Wednesday, May 30, 2012

সাধু সাধুচরণ - সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি /



সাধু সাধুচরণ

শুনছ ওহে সাধুচরণ,পেলাম তোমায়,বলি-
কপালেতে তুমি কেন আঁকো রসকলি ?
'হরে রাম,হরে কৃষ্ণ' সদাই গাহ গান,
রাম,কৃষ্ণের তরে বুঝি কাঁদে তোমার প্রাণ ?
কণ্ঠে তোমার তুলসী মালা,মুক্ত শিখা দোলে,
করতালি দাও,চেঁচিয়ে ওঠো,'গৌর হরি' বলে।
শুনেছি যে তোমার আছে শতেক বিঘা জমি,
গোহাল ভরা গরু-মহিষ,মোটর নামী-দামী।
অট্টালিকা,কৃষি-খামার,পুকুর ভরা মাছ,
বাগান বাড়ি বানিয়েছ লাগিয়ে নানান গাছ।
এত তোমার ধন সম্পদ,তবু ও কেন কাঁদো-
দিবা নিশি 'হরি হরি',ভক্তি গদগদ ?

মুচকি হেসে সাধু কহে,''বলি গোপনেতে-
কলিকালে সব পাওয়া যায় হরির-ই দৌলতে।
জেনো আমার মূল ব্যবসায় দীক্ষা,গুরুগিরি,
'হরি হরি' বলে সবার সঞ্চিত ধন হরি।
লক্ষাধিক শিষ্য আমার দেশে ও বিদেশে,
হরির নামে হাত বাড়ালেই লক্ষ টাকা আসে।
ভক্তরা সব চাঁদা তুলে,জমিয়ে টাকাকড়ি,
গুরুর যাতে কষ্ট না হয়,তাই দিয়েছে গাড়ি।
জমি,বাড়ি,খামার,পুকুর সবই তাদের দান,
দীক্ষাগুরু আমি ওদের,স্বয়ং ভগবান।
চাইলে তুমি হ'তে পারো আমার ম্যানেজার,
চাকরি ছেড়ে এসো,মাসে পাবে আশি হাজার।''

***************************************
      সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি /
***************************************
Creative Commons License
সাধু সাধুচরণ by সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি is licensed under a Creative Commons Attribution 3.0 Unported License.
Based on a work at samarkumarsarkar.blogspot.in


[<a rel="license" href="http://creativecommons.org/licenses/by/3.0/"><img alt="Creative Commons License" style="border-width:0" src="http://i.creativecommons.org/l/by/3.0/88x31.png" /></a><br /><span xmlns:dct="http://purl.org/dc/terms/" href="http://purl.org/dc/dcmitype/Text" property="dct:title" rel="dct:type">সাধু সাধুচরণ</span> by <a xmlns:cc="http://creativecommons.org/ns#" href="http://www.blogger.com/blogger.g?blogID=1050337976214013732#editor/target=post;postID=1931383186011477145" property="cc:attributionName" rel="cc:attributionURL"> সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি</a> is licensed under a <a rel="license" href="http://creativecommons.org/licenses/by/3.0/">Creative Commons Attribution 3.0 Unported License</a>.<br />Based on a work at <a xmlns:dct="http://purl.org/dc/terms/" href="samarkumarsarkar.blogspot.in" rel="dct:source">samarkumarsarkar.blogspot.in</a>.]

Sunday, May 27, 2012

হারাণের গরু কেনা - সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি

        
হারাণের গরু কেনা

ময়নাগুড়ির হারাণ দলুই,তাহার ছেলে হারু,
বহু দিনের স্বপ্ন তাদের পুষবে দুধেল গরু।
নিয়মিত দুধ পেলে,আর গোবর থেকে ঘুঁটে,
সংসারেতে সুরাহা তায় হবেই কিছু বটে।
নদীর ধারে রবিবারে বসে গরুর হাট,
সকাল থেকেই নানা জাতের গরুর জমজমাট।
তর সহে না,বাপ-বেটাতে গরুর হাটে গিয়ে-
সারি সারি বাঁধা গরু দেখে কেবল চেয়ে।
হারাণ বলে চুপি চুপি ছেলের কানে কানে-
''কথা মোটে বলবি না তুই,দেখবি আপন মনে।
গরু কেনার কায়দা আছে,দেখব পরখ ক'রে,
গরুর মত গরু কিনে ফিরব তবেই ঘরে।''

গরুর মালিক দাঁড়িয়ে সবাই গরুর আশেপাশে,
বলছে গরুর গুণের কথা সবায় হেসে হেসে।
বিক্রেতা এক হারাণ কে তার কাছে ডেকে এনে,
বলল -''খুড়ো,নাও না কেন আমার গরু কিনে ?
গরু আমার ভীষণ চতুর,বুদ্ধিতে নয় কাঁচা,
দেখতে পার পরখ ক'রে,বলছি না কো মিছা।
বামে যেতে বললে গরু,সোজা যাবে বামে,
বল যদি 'ঘুমোও',তবে পড়বে ঢলে ঘুমে।
যদি বল,কাল কে দেব আড়াইশো টা ঘুঁটে,
ঠিক তত টা গোবর দেবে,সারাটি দিন খেটে।''
রেগে আগুন হারাণ বলে-'এমন ভাল গরু,
ফিরিয়ে নিয়ে যাও গে বাড়ি,বানাও তোমার জরু।''

আর এক জনে বলল ডেকে,''এসো,এসো দাদা,
গরু কিনতে এসে দেখি ঘেমে হ'লে কাদা।
আমার গরুর তুলনা নাই,মাধ্যমিকে পাশ,
দিনে তে ভাত,রাতে রুটি,খায় না মোটে ঘাস।''
হারাণ বলে-''তোমার গরু পড়েছে ইস্কুলে ?
ঘাস খায় না,ভাত,রুটি খায়,-বোকা আমায় পেলে?'' 
'আহা দাদা,চটো কেন ?'-বলে মালিক হেসে,
''আমার মেয়ে পড়ত বসে গোয়াল ঘরের পাশে।
গরুর সাথেই খাবার খেতো,পড়ত সে মন দিয়ে,
শুনত গরু সকল পড়াই,মাথা টা দুলিয়ে।
মেয়ে আমার মাধ্যমিক পাশ,গরু ও সেই পাশ'',
হারাণ বলে-'তোমার গরু কিনলে সর্বনাশ।'

মুসলমান এক দালাল ডাকে,''সেলাম বাবুসাব,
বাপের জন্মে মিছা কথা বলি নি জনাব।
গরুর আমার কাঁচা বয়েস,দেখুন না মুখ খুলে,
চার টি দাঁতের এমন গরু বরাত জোরেই মেলে।
বহু বছর দুধ যে পাবেন,একেবারেই পাকা,
দামের সাথে বকশিস ও চাই গোটা কয়েক টাকা।''
আগ্রহেতে হারাণ গরুর মুখ টি তুলে ধরে,
গভীর ভাবে বুলিয়ে নজর বলে রাগের স্বরে-
''দাঁতের ডাক্তার দিয়ে তুমি তুলেছ ওর মাড়ি,
আট টি দাঁতের চার খানি সাফ,বুদ্ধি তোমার ভারি !
ইচ্ছে করে,থাপড় মেরে তোমারও দাঁত ফেলি,
শয়তানি তে সেরা তুমি,মুখে মধুর বুলি ।''

আর এক মালিক তিলক কাটা,বলে-''শুনুন দেখি,
চেহারা টা গোবেচারা,আপনি কবি না কি ?
দেখুন গরুর রূপের বাহার ! চক্ষু ডাগর,কালো,
নাম করা এক কবি ওকে সখে পুষেছিল।
যে কবিতার অর্থ কেহ পায় না মোটেই খুঁজে,
সেই কবিতাও এই গরু তে সহজেতেই বোঝে।
সখ ক'রে তাই কবি ওকে ডাকত 'বনলতা',
মাঝে মাঝে দেখতে দিত,তার কবিতার খাতা।
নামের মোহে মানুষ,গরুর একই প্রবণতা,
সুযোগ পেতেই চিবিয়ে খায় ও কবির গোটা খাতা।
নিন কিনে এই কবি গরু,হাজার তিনেক দাম'',
হারাণ বলে-'তোমার গরুর ক্ষুরে তে প্রণাম।'

গলদঘর্ম হয়ে হারাণ দেখে হাটের কোণে,
গরু নিয়ে গ্রাম্য লোক এক দাঁড়িয়ে উদাস মনে।
সামনে যেতেই বলে-''দাদা,খাই নি কয়েক দিন,
যা হোক কিছু দিয়ে ওকে আপনি কিনে নিন।
গরীব হ'লেও মিথ্যা বলে বিকাই না কো মাথা,
একেবারেই দুষ্ট গরু,শোনে না কো কথা।
যেমন গোঁয়ার,তেমনি রাগী,গুঁতোয় বড় বেশী,
এমন গরু দেখে,বলু্‌ন,কে আর হবে খুশী।
ন্যায্য যাহা মনে করেন,সে টুকু দিন দাম,''
হারাণ বলে-''তোমার গরু আমিই কিনে নিলাম।
দেড় হাজার ই দিলাম তোমায়,ফোটাও মুখে হাসি,
দাও গো বিদায় ভাল মনে,আমরা তবে আসি।''

গরু কিনে ফেরার পথে বলল রেগে হারু-
''দেড় হাজারে কিনলে তুমি এমন বাজে গরু ?
ভাল ভাল গরু ছেড়ে,এর মাঝে কি পেলে ?
ক্ষতি হ'লো অনেক টাকা,পরাণ টা যায় জ্বলে।''
হারাণ বলে সজল চোখে,''দেখ্ আমাদের দেশে,
বুদ্ধি মাথায় কম হ'লে সব গরু বলে হাসে।
ছেলে বেলায় কাঁচা ছিলাম অঙ্ক,ধারাপাতে,
গরু বলে অপমান তাই ক'রতো সকলেতে।
যৌবনেতে গোঁয়ার ছিলাম,বেজায় ছিল রোখ,
গরু যদি বলতো কেহ,লাল হ'তো দুই চোখ।
মেরে ধরে গরু বলার নিতাম প্রতিশোধ,
আমার,আর এই গরুটার,একই জীবন বোধ। 

শিখতে যদি না পারিস,তো বলবে লোকে গরু,
শিখাতে যে পারল না,সে রয়েই গেল গুরু।
মেনে নিতে পারি না তো এমন অবিচার,
এই গরুকে দিয়েই শুরু ক'রবো প্রতিকার।
যত্ন ক'রে,ধৈর্য ধরে,শিখাব সব কিছু, 
যতই গুঁতো মারুক,আমি ছাড়ব না ওর পিছু।
একদিন ঠিক শান্ত হবে,ঠাণ্ডা হবে মাথা,
আদরেতে চাটবে গা-হাত,শুনবে সকল কথা।
হয়তো আমার মৃত্যুতে ওর ঝরবে চোখে জল,
জানবি সে দিন,স্বপ্ন আমার হয়েছে সফল।
যত্ন করে শিক্ষা দেবার ক্ষমতা নেই যার,
গরু বলে অপমানের কে দেয় অধিকার ?''

************************************
  সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি /
************************************
Creative Commons License
হারাণের গরু কেনা by সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি is licensed under a Creative Commons Attribution 3.0 Unported License.
Based on a work at samarkumarsarkar.blogspot.in

[<a rel="license" href="http://creativecommons.org/licenses/by/3.0/"><img alt="Creative Commons License" style="border-width:0" src="http://i.creativecommons.org/l/by/3.0/88x31.png" /></a><br /><span xmlns:dct="http://purl.org/dc/terms/" href="http://purl.org/dc/dcmitype/Text" property="dct:title" rel="dct:type">হারাণের গরু কেনা</span> by <a xmlns:cc="http://creativecommons.org/ns#" href="http://www.blogger.com/blogger.g?blogID=1050337976214013732#editor/target=post;postID=1409425036505459095" property="cc:attributionName" rel="cc:attributionURL"> সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি</a> is licensed under a <a rel="license" href="http://creativecommons.org/licenses/by/3.0/">Creative Commons Attribution 3.0 Unported License</a>.<br />Based on a work at <a xmlns:dct="http://purl.org/dc/terms/" href="samarkumarsarkar.blogspot.in" rel="dct:source">samarkumarsarkar.blogspot.in</a>.]

Thursday, May 24, 2012

সুবিবেচক রিকশাওয়ালা - সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি


    সুবিবেচক রিকশাওয়ালা

শ্যামনগরের উঠতি যুবক 'ব্রজহরি বল',
সব বিষয়েই কারণ খোঁজেন,এতই কৌতুহল।
বাজার যাবেন,থলে হাতে,ডাকেন-''রিকশাওয়ালা,
কত নেবে রিকশা ভাড়া ? যাব বাদামতলা।''
রিকশাওয়ালা দৃষ্টি দিয়ে তাঁকে পরখ ক'রে-
বলে,''বাবু,দিতে হবে তিরিশ টাকা মোরে।
এর কমেতে যাব না কো,যতই করুন দর,
সুবিবেচক রিকশাওয়ালা,আমি-'নিতাই ধর'।''

'রিকশাওয়ালা সুবিবেচক' শুনতে লাগে মজা,
উঠে বসেন ব্রজহরি,কারণ টা চাই খোঁজা।
চলতে চলতে শুধান তিনি,''দুই মাইল পথ মোটে,
তাতেই নেবে তিরিশ টাকা ? পিত্তি গেলো চটে।
বললে,তুমি সুবিবেচক,কেমন বিবেচনা ?
নিচ্ছো কেন তিরিশ টাকা,কারণ টা চাই জানা।
দুই মাইল পথ রিকশা ভাড়া পনের টাকাও নয়,
কেমন করে তোমার ভাড়া তিরিশ টাকা হয় ?''

নিতাই বলে,''শুনুন তবে আমার চিন্তাধারা,
ধর্ম পথে দায় বুঝে ঠিক করি রিকশা ভাড়া।
শিশু,নারী,বয়েস বেশী,বলার কিছুই নাই,
তাদের কাছে এইটুকু পথ দশটি টাকাই চাই।
তার চেয়ে কম নিতে পারি হ'লে দুঃস্থ,রোগী,
কানা,খোঁড়া,নুলো,বোবা,সাধু,ফকির,যোগী।
রিকশা চড়ে দায়ে পড়ে,নেই কো প্রচুর টাকা,
ভাড়ার নামে তাদের পকেট করি না কো ফাঁকা।

কিন্তু যারা টাকার কুমীর,মহাজন,সুদখোর,
জমির দালাল,উকিল,মাতাল,ভদ্রবেশী চোর,
অসৎ পথে কামাই করে,ক্ষমতা দেখায়, 
ওদের কাছে পঁচিশ-তিরিশ চাওয়া কি অন্যায় ?
রাজনৈতিক নেতা,যারা করেন দাদাগিরি,
সমাজ সেবার আড়ালেতে করেন পুকুর চুরি।
পকেটেতে প্রচুর টাকা পরের পকেট মেরে, 
বাগে পেলে ষাট-সত্তর নেবই আদায় ক'রে।'' 

ব্রজহরি বলেন,''তোমার কথা নিলাম মেনে,
আমার ভাড়া তিরিশ টাকা,বলো কি কারণে ?''
নিতাই বলে,''গরীব মানুষ গতর খেটেই খায়,
রিকশা চড়ে বাজার যাবে ভাবলে হাসি পায়।
তরুণ তাজা যুবকেরা অলস নয় কো মোটে,
এই টুকু পথ জলভাত,তাই অনায়াসেই হাঁটে।
চাইলে পরে যেতে পারে স্কুটারে,সাইকেলে,
রিকশা চড়ে বাজারে যায় অলস ও বে-আক্কেলে।

সবে তুমি উঠতি যুবক,বয়স তো নয় বেশী,
এই বয়সেই হয়ে গেছো আয়েসী,বিলাসী।
দুই মাইল পথ হাঁটতে যদি কষ্ট তোমার হয়,
সৎ পথেতে খেটে খাওয়ার মানুষ তুমি নয়।
তোমার মত আয়েসীরাই আজকে দেশের নেতা,
অসৎ পথে ফুলে-ফেঁপে,দেখান নানা কেতা।
তাদের পথেই চলছো তুমি,এখন শিক্ষানবিস,
জরিমানা যোগ করে তাই তোমার ভাড়া তিরিশ।''


***********************************
সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি
***********************************
Creative Commons License
সুবিবেচক রিকশাওয়ালা by সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি is licensed under a Creative Commons Attribution 3.0 Unported License.
Based on a work at samarkumarsarkar.blogspot.in

[<a rel="license" href="http://creativecommons.org/licenses/by/3.0/"><img alt="Creative Commons License" style="border-width:0" src="http://i.creativecommons.org/l/by/3.0/88x31.png" /></a><br /><span xmlns:dct="http://purl.org/dc/terms/" href="http://purl.org/dc/dcmitype/Text" property="dct:title" rel="dct:type">সুবিবেচক রিকশাওয়ালা</span> by <a xmlns:cc="http://creativecommons.org/ns#" href="http://www.blogger.com/blogger.g?blogID=1050337976214013732#editor/target=post;postID=2610147228898134869" property="cc:attributionName" rel="cc:attributionURL"> সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি</a> is licensed under a <a rel="license" href="http://creativecommons.org/licenses/by/3.0/">Creative Commons Attribution 3.0 Unported License</a>.<br />Based on a work at <a xmlns:dct="http://purl.org/dc/terms/" href="samarkumarsarkar.blogspot.in" rel="dct:source">samarkumarsarkar.blogspot.in</a>.]

Tuesday, May 22, 2012

চোরের মর্মব্যথা - সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি


চোরের মর্মব্যথা

থানার বড় দারোগা বাবু মেরে রুলের গুঁতো, 
বলেন-"বেটা ভজহরি,এবার কিসের ছুতো?
বারে বারে নিষেধ করি,করিস না আর চুরি,
কথা কানে তুলিস না তুই,বদমাইসের ধাড়ী!

এত কিছু থাকতে উপায়,বাছলি চুরি-র পেশা,
বছর বছর জেল খেটে তোর মেটে না কো আশা?
জানিস না তুই চুরি করে,ধরা পড়া পাপ?

চোর বলে যে ডাকে সবাই,হয় না অনুতাপ?''

ভজহরি বলে-''বাবু,পেশা একটা চাই ,
মূর্খ মানুষ,লেখাপড়া কিছুই শিখি নাই।
ঘরে ঘরে বেকার ব'সে কত রাজা-গজা,
সেই বাজারে চাকরি পাওয়া এত কি আর সোজা?
ব্যবসা ক'রে খাবো যে তার নাই কোন মূলধন,
নিঃস্ব জনে ঋণ দেবে কোন্ গবেট মহাজন?
গতর খেটে খাবো,দেহে নাই কো তেমন জোর,
বাধ্য হয়েই চুরি ক'রে হয়েছি আজ চোর।''

দারোগা কন মুচকি হেসে -''ও রে হতচ্ছাড়া,
চুরি করেই খাবি যদি,পড়িস কেন ধরা?
চোর হ'তে যে এলেম লাগে,লাগে কেরামতি,
ধরা পড়ে সাজা পেলে,আমার যে হয় ক্ষতি।
গোপনেতে বলছি তোকে, 'হ' না মহাচোর,
ডাকাতি কর,ছিনতাই কর,যা মনে চায় তোর।
মাসে মাসে আমায় শুধু দিবি মাসোহারা,
বুদ্ধি সবই বাতলে দেবো,পড়বি না আর ধরা।''

ভজহরি বলে-''বাবু,ধ'রে গেছে ঘৃণা,
চুরি ক'রে আজকাল আর কিছু যে মেলে না।
আগের কালে চুরি ক'রে হ'তো বড়ই হিত,
একটি রাতের পরিশ্রমে এক মাস নিশ্চিত।
কাঁসার বাসন,সোনা-রূপার গয়না,টাকাকড়ি,
রেডিও,টেপ,জামা-কাপড়,সাইকেল,হাত-ঘড়ি,
হাতিয়ে এনে বেচলে পরেই নগদ পেতাম হাতে,
সুখে-দুঃখে সংসার টা চলতো কোন মতে।

দিনকাল সব বদলে গেছে,কি যে আমার জ্বালা,
ঘরে ঘরে স্টিলের বাসন,চিনে মাটির থালা!
টাকা সবাই ব্যাঙ্ক-এ রাখে,গয়না লকারেতে,
দুই-চার শো খুচরো টাকা মেলে কোন মতে।
নকল গয়না,সস্তা ঘড়ি,কে আর বলুন কেনে?
ছিঁচকে চোরের বেঁচে থাকা শক্ত এ দুর্দিনে।
বউ-টা আমার লাজ বাঁচাতে,গলায় দেছে দড়ি,
ছেলে আমার পেটের ক্ষুধায় ছেড়ে গেছে বাড়ি।

ডাকাতি বা রাহাজানি-র মুরদ আমার নাই,
চুরি করার ভান টি ক'রে,ধরা যে দিই তাই।
প্রহার জোটে,লাঞ্ছনা সই,তবু ও গেলে জেলে,
অখাদ্য হোক,দুই বেলা তো খাবার সেথায় মেলে।
এমনি করেই বেঁচে আছি,কয়েক বছর ধ'রে,
সুন্দর এই পৃথিবী কেউ ইচ্ছা ক'রে ছাড়ে?
দিন না বাবু,দয়া ক'রে দশটি বছর জেল,
জেলেই যেন মরি আমি,'খতম ক'রি খেল'।''

********************************
সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি

********************************
Creative Commons License
চোরের মর্মব্যথা by সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি is licensed under a Creative Commons Attribution 3.0 Unported License.
Based on a work at samarkumarsarkar.blogspot.in

[<a rel="license" href="http://creativecommons.org/licenses/by/3.0/"><img alt="Creative Commons License" style="border-width:0" src="http://i.creativecommons.org/l/by/3.0/88x31.png" /></a><br /><span xmlns:dct="http://purl.org/dc/terms/" href="http://purl.org/dc/dcmitype/Text" property="dct:title" rel="dct:type">চোরের মর্মব্যথা</span> by <a xmlns:cc="http://creativecommons.org/ns#" href="http://www.blogger.com/blogger.g?blogID=1050337976214013732#editor/target=post;postID=6727815267958728569" property="cc:attributionName" rel="cc:attributionURL">সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি </a> is licensed under a <a rel="license" href="http://creativecommons.org/licenses/by/3.0/">Creative Commons Attribution 3.0 Unported License</a>.<br />Based on a work at <a xmlns:dct="http://purl.org/dc/terms/" href="samarkumarsarkar.blogspot.in" rel="dct:source">samarkumarsarkar.blogspot.in</a>.]

Saturday, May 19, 2012

কপালের ফের - সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি

            
কপালের ফের

সারা জীবন দেখে এলেম,সুখ নাই মোর চিতে,
সবার জীবন রসাল,মধুর,আমার জীবন তিতে।
যা কিছু সব নজর কাড়া নিজে পেতে চাই,
সকলে পায় অনায়াসে,আমি ই নাহি পাই।
দিনে দিনে বাড়ে জ্বালা,এমন কেন হবে ?
আমি শুধু পাব না,আর সবাই শুধু পাবে !
মনের জ্বালা মাথায় ছড়ায়,কেবল ভেবে মরি,
'কেমন করে সবার জীবন তিক্ত করে ছাড়ি।'

কয়েক বিঘা জমি কিনে,চারদিকে দিই বেড়া,
কিষাণ,মজুর নিয়োগ করি,বসাই ও পাহারা।
বিহার থেকে কড়া তেতো উচ্ছে চারা এনে,
জমি চষে সরেস ক'রে মাটিতে দিই বুনে।
যত্ন করে জল সেচ দিই,ছিটাই ওষুধ,সার,
অল্প দিনেই গজিয়ে ওঠে উচ্ছে-লতার ঝাড়।
কালচে-সবুজ ফল ধরে তায় হাজারে-হাজারে,
এমন তেতো বিষ যে ভয়ে পিঁপড়ে নাহি ধরে।

বাছাই ক'রে উচ্ছে তুলে ঝুড়ি ঝুড়ি এনে,
সপ্তাহভর ভিজিয়ে রাখি বিষাক্ত দ্রবণে।
যত ক্ষতিকারক জিনিস আমার ছিল জানা,
দ্রবণেতে মিশিয়ে হই আহ্লাদে আটখানা।
মনে আশা,এবার সবার রাসায়নিক বিষে
নাড়ী-ভুঁড়ি মোচড় খাবে,ভুগবে বুকের দোষে।
অনেক কিছু পেয়ে ও দের বড়ই সুখী মন,
একটু কষ্ট পেয়ে খুশী ক'রুক আমার মন।

ঘরে ঘরে গিয়ে বলি,দেখিয়ে কপট ছল-
''উচ্ছে চাষে নেমে এবার পেলাম প্রচুর ফল।
পাড়াপড়শী আপনারা সব বড়ই আপন জন,
সামান্য ফল বিলিয়ে ক'রি পুণ্য উপার্জন।
আশীর্বাদ করুন সবাই,যেন এমন ক'রে,
প্রতি বছর উচ্ছে দিতে পারি সবার ঘরে।''
কথার ফাঁকে পাত্র ভরা উচ্ছে বিলাই মেলা,
মনে মনে বলি,'খেয়ে,বুঝবে কেমন ঠ্যালা।'

দুই তিন দিন গত হ'লে মন করে উস-খুস,
কেন খবর পাচ্ছি না,''সব রোগেতে বেহুঁশ'' !
হিসাব মত হওয়া উচিত সবার করুণ দশা,
পেটের মোচড় এমন ভীষণ,মাটিতে সব বসা।
খাটে শোয়ার নেই কো সময়,বারে বারে বেগ,
বুকের ব্যথায় কাতর সবাই,মনে তে উদ্বেগ।
ব্যাপার টা কি বুঝতে চেয়ে গেলাম সবার ঘরে,
সবার দাবী 'আর কিছু ফল দিন না দয়া ক'রে।'

সবাই বলে,''দাদা তোমায় জানাই নমস্কার,
এটাই বুঝি সর্বকালের সেরা আবিষ্কার।
উচ্ছে এমন মিষ্টি,সরেস,ভেবে না পাই কূল,
মহান আবিষ্কারক তুমি,বলছি তা নির্ভুল।''
সন্দেহে এক উচ্ছে নিয়ে কামড় মেরে দেখি,
অমৃতময় মধুর রসাল উচ্ছে এ যে,সে কি !
বিষে বিষে বিষক্ষয় হয়,তা তো জানাই ছিল।
অধিক বিষের বিক্রিয়াতে নতুন সৃষ্টি হ'লো।

স্বভাব আমার বদলে গেছে এই ঘটনার জেরে,
দ্রবণ টি কে 'পেটেন্ট' করে ছেড়েছি বাজারে।
নির্মাতারা বৎসরেতে যে টাকা দেন ধরে,
কয়েক লক্ষ জমে তা তে সব খরচের পরে।
পেতে আমি চাই না এখন,দিলেই বরং খুশী,
নিজের চেয়েও ভালবাসি,পরের মুখের হাসি।
শিক্ষা পেলাম,''আসল জিনিস মানুষের এই মন,
মনের অসুখ সারলে পরেই সবাই আপন জন।''

**************************************
  সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি
**************************************
Creative Commons License
কপালের ফের by সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি is licensed under a Creative Commons Attribution 3.0 Unported License.
Based on a work at samarkumarsarkar.blogspot.in

[<a rel="license" href="http://creativecommons.org/licenses/by/3.0/"><img alt="Creative Commons License" style="border-width:0" src="http://i.creativecommons.org/l/by/3.0/88x31.png" /></a><br /><span xmlns:dct="http://purl.org/dc/terms/" href="http://purl.org/dc/dcmitype/Text" property="dct:title" rel="dct:type">কপালের ফের </span> by <a xmlns:cc="http://creativecommons.org/ns#" href="http://www.blogger.com/blogger.g?blogID=1050337976214013732#editor/target=post;postID=4840393640429183105" property="cc:attributionName" rel="cc:attributionURL">সমর কুমার সরকার  / শিলিগুড়ি </a> is licensed under a <a rel="license" href="http://creativecommons.org/licenses/by/3.0/">Creative Commons Attribution 3.0 Unported License</a>.<br />Based on a work at <a xmlns:dct="http://purl.org/dc/terms/" href="samarkumarsarkar.blogspot.in" rel="dct:source">samarkumarsarkar.blogspot.in</a>.]

Wednesday, May 16, 2012

সমালোচকের প্রতি - সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি



সমালোচকের প্রতি

আমার ছবি আঁকব আমি,
তোমার কিসের গেরো ?
বলছ সেজে সমালোচক-
''ছবি টা ঠিক করো।
রঙ ফোটে নি,রূপ ফোটে নি,
ফোটে নি ঠিক ভাব,
অলঙ্করণ,প্রকরণের
যথেষ্ট অভাব।
কাঁচা হাতে আঁকলে ছবি
এই রকম ই হয়,
ছবি এ কে বলব কি না
মনেতে সংশয়।''

সমালোচক মশাই তোমায়
জানাই নমস্কার,
বিষয় টি ঠিক আমায় আগে
জানাও পরিষ্কার।
বহু দিনের পরিশ্রমে
এঁকেছি যে ছবি,
শুধুই কি তা রঙের প্রলেপ ?
অবাস্তব,আজগুবি ?
ছবির মাঝে পাও নি খুঁজে
আমার মনের ভাষা ?
আমার স্বপ্ন,আমার জীবন,
আমার ভালবাসা ? 

তোমার আমার মন যেখানে
বাঁধা ভিন্ন সুরে,
তোমার সাথে আমার মনের
মিল হবে কি ক'রে ?
আমার দেখার দৃষ্টি যদি
তোমার মতই হয়,
তোমার আমার তফাৎ তবে
কি ক'রে আর রয় ?
বলতে যদি-'তোমার ছবি
আঁকো তোমার মত',
আমার সত্তা,অন্তরাত্মা
আপনি হ'তো নত।

তোমার মতে,ছবিটিতে
রঙ ফোটে নি ভালো,
মামুলী এক রঙীন ছবি
একেবারেই খেলো।
বলছ তুমি চারদিকেতে
যা কিছু ছড়িয়ে,
আঁকতে হবে তাদের আসল
রঙেতে রাঙিয়ে ?
ছবির আকাশ নীল ই হবে,
মেঘ টা সাদা কালো ?
ছবি এঁকে লাভ কি তবে ?
আলোক চিত্রই ভালো।

অন্তরে যে ভালবাসা,
বিরহ ভার সহি,
কোন রঙেতে আঁকতে হবে
জানো নিশানদিহি ?
নিঃস্ব মনের হাহাকারে
হৃদয় যখন টুটে,
বলতে পারো কোন রঙেতে
উঠবে তাহা ফুটে ?
সততা ও কদর্যতার
রঙ কি তোমার জানা ?
তবে কেন রঙ নিয়ে এই
মিথ্যা প্রবঞ্চনা ?

সাতরঙা এক ইন্দ্রধনু
আমার হৃদাকাশে,
ছড়ায় রঙীন বর্ণ ছটা
সৃষ্টিরই উল্লাসে।
কল্পনাতে ছুবানো যে রঙ
ফোটে আপন মনে,
চিত্রপটে ফুটিয়ে তুলি
সূক্ষ্ম তুলির টানে।
কল্পনা তো নয় ক্রীতদাস
চলবে হুকুম মানি,
কখন কি রঙ ফুটবে মনে
আমিই কি তা জানি ?

বলছ ছবির রূপ ফোটে নি,
ফোটে নি ঠিক ভাব,
দেখছি বৃথা নিন্দা করা
তোমার-ই স্বভাব।
রূপসাগরে ডুবে আমি
যে রূপ খুঁজে পাই,
ভাবসাগরে ডুবিয়ে তারে
মানসনেত্রে চাই।
বিমূর্ত যে রূপটি ভেসে 
ওঠে মানসপটে,
অকপটে তাহাই আঁকি 
আমার চিত্রপটে।

সমালোচক রূপে তুমি
আসলে নিন্দুক,
ঈর্ষা তোমায় তাড়িয়ে বেড়ায়
মনেতে নেই সুখ।
তোমার অক্ষমতা তুমি
চাপাও পরের ঘাড়ে,
তোমার চেয়ে ভালো কিছুই
পড়ে না নজরে।
গড়ার মন্ত্র জানো না তাই
ভাঙতে পারো ভালো,
আলোর পথের যাত্রী সেজে 
হরণ করো আলো।

****************************
সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি 
****************************
Creative Commons License
সমালোচকের প্রতি by সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি is licensed under a Creative Commons Attribution 3.0 Unported License.
Based on a work at samarkumarsarkar.blogspot.in

[<a rel="license" href="http://creativecommons.org/licenses/by/3.0/"><img alt="Creative Commons License" style="border-width:0" src="http://i.creativecommons.org/l/by/3.0/88x31.png" /></a><br /><span xmlns:dct="http://purl.org/dc/terms/" href="http://purl.org/dc/dcmitype/Text" property="dct:title" rel="dct:type">সমালোচকের প্রতি</span> by <a xmlns:cc="http://creativecommons.org/ns#" href="http://www.blogger.com/blogger.g?blogID=1050337976214013732#editor/target=post;postID=6690184741543836152" property="cc:attributionName" rel="cc:attributionURL">সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি</a> is licensed under a <a rel="license" href="http://creativecommons.org/licenses/by/3.0/">Creative Commons Attribution 3.0 Unported License</a>.<br />Based on a work at <a xmlns:dct="http://purl.org/dc/terms/" href="samarkumarsarkar.blogspot.in" rel="dct:source">samarkumarsarkar.blogspot.in</a>.]

Monday, May 14, 2012

পিতৃ বাক্য পালন - সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি



পিতৃ বাক্য পালন 

বারুইপুরের গোবিন্দ গুঁই ভীষণ রোগে ভুগে,
মাতৃহীন পুত্রটিকে বলেন মরার আগে-
''জমি-জিরাত,টাকা-কড়ি,যেটুক গেলাম রেখে,
সারা জীবন চলে যাবে,চলিস যদি দেখে।
যে পথেতে মহাজনে করেন বিচরণ,
সেই পথেতে চলবি সদাই -আমায় দে বচন।''
পুত্র নিমাই বলে -''তোমার আদেশ শিরোধার্য,
এখন থেকেই করবো শুরু,তোমার কথায় কার্য।''

গ্রাম্য গণ্ডমূর্খ নিমাই,সরল যে অন্তর,
মহাজনের পথেই যাবে,ভাবে নিরন্তর।
গ্রামেই বসত করেন ধনী ভবানী শিকদার,
তেজারতির ব্যবসা,সাথে বন্ধকী কারবার।
চালের কল,পাটের গুদাম,বিশাল বাসভবন,
সবাই তারে সমাদরে ডাকে 'মহাজন'।
নিমাই ভাবে,পিতার কথা রাখতে যদি হয়,
যেথায় যেথায় যান ভবানী,সেথায় যেতেই হয়।

নিত্য বাহির হন ভবানী সাঁঝের অবসানে,
মোটর চড়ে শহরেতে পানশালা সন্ধানে।
তাহার পিছে চলতে নিমাই কিনে ফেলে গাড়ি,
পানশালাতে প্রবেশ করে পিছেতে তাহারি।
দেখে নিমাই-মহাজন আর ইয়ার-দোস্ত মিলে,
বোতল থেকে শরবৎ পান করছে গ্লাসে ঢেলে।
রকমারি মাছ,মাংস খাচ্ছে মহা সুখে,
নিমাই ভাবে,'শরবৎ টা একটু দেখি চেখে'।

'চাখার চেয়ে খাওয়া ভাল'- গুণী জনেই বলে,
চাখার নেশায় পড়লে মানুষ বিপথে যায় চলে।
চাখার নেশা সর্বনাশা,এতই তাহার দাপ,
চাখার বিষয় যত বাড়ে,ততই বাড়ে পাপ।
খাবার খেলে,তৃপ্ত মনে থাকে না আর দ্বিধা।
চাখলে খাবার তৃপ্তি তো দূর,বেড়েই চলে ক্ষুধা।
জ্ঞানী জনে না চেখে তাই সরাসরিই খায়,
চাখতে গিয়ে মূর্খ শুধু বিপদ ই বাড়ায়।

নিত্য মহাজনের পিছে পানশালাতে যেয়ে,
সরল নিমাই চতুর হ'লো সরাসরিই খেয়ে।
ভাবে নিমাই,মহাজনের পথে চলেই আজ,
নতুন জীবন পেলাম,সাথে সুখী এক সমাজ।
মাতাল হলেও এদের জীবন-ক্ষেত্র বৃহত্তর।
এদের দলে ভিড়লে আয়ের পথটি হবে দৃঢ়।
দূরদৃষ্টি ছিল পিতার,জ্ঞান ও চমৎকার,
মহাজনের পথে ই হবে উন্নতি আমার।

একটি গুণে গুণী হ'লে চেনেই বা কয় জন ?
বিবিধ গুণে গুণী যিনি,তিনিই মহাজন।
মাঝে মাঝেই অধিক রাতে চড়ে মোটরেতে,
সেজেগুজে ভবানী যান নিষিদ্ধ পল্লীতে।
নিত্য নতুন সহচরী,নিত্য নতুন লীলা,
নিমাই ও যায় সঙ্গে,যেন গুরুর সাথে চেলা।
সেখানেতে আলাপ বাড়ে উচ্চ মহলেতে,
মহা জনের পথে নিমাই করে কেল্লা ফতে।

শোনার কথা শোনে সবাই,বোঝে না সব জনে,
যে জন বুঝে গ্রহন করে আপন প্রাণ ও মনে,
সফলতা,সার্থকতা আসে তাহার হাতে,
বোঝার ভুলে খাটুনি সার,বাধা ঊন্নতি তে।
মূর্খ নিমাই পিতৃবাক্য ঠিক ই বুঝেছিল,
সময় কালে তাহার ফলে ভাগ্য ফিরে গেলো।
ভাগ্যরথের চাকা যে হায় কখন কাহার ঘোরে,
যাহার ঘোরে,সে ই কেবল ব্যাখ্যা দিতে পারে।

সরল নিমাই পিতৃবাক্য মেনে মনে-প্রাণে,
মহাজনের পথেই সদা গিয়েছে সব স্থানে।
সুন্দরী তিন গৃহিণী তার,সাত গাড়ি,পাঁচ বাড়ি,
ঠিকাদারি,বাস ও লরি,ব্যবসা রকমারি।
মহাজনের সঙ্গে মিশে,বিদ্যা শিখে তার,
গণ্যমান্য মহাজন আজ,আনন্দ অপার।
নিমাই বলে,''পিতৃবাক্য সদাই পালন করি,
বিশ্বাসেতে রত্ন মেলে,তর্কে কানা-কড়ি''।


********************************
সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি
*********************************

Creative Commons License
পিতৃ বাক্য পালন by সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি is licensed under a Creative Commons Attribution 3.0 Unported License.
Based on a work at samarkumarsarkar.blogspot.in

[ <a rel="license" href="http://creativecommons.org/licenses/by/3.0/"><img alt="Creative Commons License" style="border-width:0" src="http://i.creativecommons.org/l/by/3.0/88x31.png" /></a><br /><span xmlns:dct="http://purl.org/dc/terms/" href="http://purl.org/dc/dcmitype/Text" property="dct:title" rel="dct:type">পিতৃ বাক্য পালন </span> by <a xmlns:cc="http://creativecommons.org/ns#" href="http://www.blogger.com/blogger.g?blogID=1050337976214013732#editor/target=post;postID=3035946611783546059" property="cc:attributionName" rel="cc:attributionURL">সমর কুমার সরকার / শিলিগুড়ি</a> is licensed under a <a rel="license" href="http://creativecommons.org/licenses/by/3.0/">Creative Commons Attribution 3.0 Unported License</a>.<br />Based on a work at <a xmlns:dct="http://purl.org/dc/terms/" href="samarkumarsarkar.blogspot.in" rel="dct:source">samarkumarsarkar.blogspot.in</a>.]